আজ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী সাদেক সাহেবের জন্ম বার্ষকী

বিনম্র শ্রদ্ধা
=======
প্রান প্রিয় সাদেক সাহেবের আজ ৮৫ তম জন্ম বার্ষিকী। কেশবপুরবাসী শ্রদ্ধাভরে স্বরন করছে এই মহান মানুষকে। সাদেক সাহেবকে মনে রেখেছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। দলমত নির্বিশেষে কেউ তাঁকে ভুলিনি! যারা তাঁর সাথে দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থে বিরোধিতা করেছিলেন তারাও ভুলতে পারেনি মোহহীন ব্যক্তিত্ব সাদেক সাহেবকে! তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হয় প্রতিটি হৃদয় ! সবায়কে মহান সাদেক সাহেবের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারন করতে যে ব্যকুলতা লক্ষ্য করছি তা সত্যিই ভালো লাগার মতো। আমিও ব্যকুল! স্মৃতি পটে ভাসছে বিশ বছর আগের অগনিত ঘটনা!

নিজেকে অত্যন্ত ধন্য মনে করি এই শ্রেষ্ট মানুষের পাশে টানা দশ বছর থাকতে পেরে! মনোজ, ধীরাজ ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভুমি কেশবপুরে উন্নয়নের নেশা নিয়ে সাদেক সাহেবের আবির্ভাব হবে তা কেশবপুরবাসি কল্পনাও করিনি। করার কথাও না। কারন এমন যাদুকরিভাবে অন্ধকার গুহা থেকে কেশবপুরকে উন্নয়নের ছোয়া দিয়ে আলোকিত করা যায় তা কারো ভাবনায় আসতে পারে না। সেজন্য কেশবপুরবাসি আবু শরাফ হিজবুল কাদের সাদেক সাহেবকে সৌভাগ্যের প্রতিক হিসেবে গণ্য করে। দিনে দিনে তিনি মানুষের মুখে সাহেব নামের উপাধীতে ভূষিত হয়েছেন !
জনতার দেয়া সাদেক সাহেব নামেই তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন! তিনি কি কি উন্নয়ন করেছেন তা বড় কথা নয়। মানুষের মুখে মুখে শোনা যায় কোন উন্নয়নটা তিনি করেননি?
সাদেক সাহেবই চিরদিনের রাজাকার, বিএনপি ও জামায়াতের কবল থেকে বঞ্চিত কেশবপুরকে উদ্ধার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের তালিকাভুক্ত করিয়ে ছিলেন! '৯৬ নির্বাচনে হাতে গোনা কয়েকজন নেতা নিয়ে তিনি কেশবপুরের প্রতিটি এলাকায় গিয়ে মানুষকে বলেছিলেন "আপনারা আমাকে ভোট দিন..নিরাস হবেন না"।  জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনি কাউকে নিরাস করেননি।

ছন্নছাড়া এই আমি শখের বসে জড়িয়ে সংবাদকর্মী হিসেবে এই মহান ব্যক্তির সান্নিধ্য পেয়েছিলাম প্রায় দশ বছর! তিনি আমাকে যে স্নেহ দিয়ে গেছেন তা কোন দিন ভোলা যাবে না। কেশবপুরে সাদেক সাহেবের বাড়ির অতি নিকটে আমার প্রায় অচল ঔষধের দোকান। কেশবপুরে আসলে এই দীর্ঘ সময়ে কখনও নিজে গিয়েছি আবার কখনো তিনি বাসার কাজের লোক দিয়ে ডেকে নিয়ে নানা ধরনের কথা বলেছেন ও শুনেছেন।

২০০৭ সাল ৯ সেপ্টেম্বর সকাল বেলায় কে যেন বলল সাদেক সাহেব অসুস্থ! আগের রাতে তিনি অসুস্থবোধ করলে কেশবপুর হাসপাতালের একজন ডাক্তারকে বাসায় ডেকে পরামশ্য নেন। আগেই কয়েকবার উনার হার্টে রিং বসানো ছিলো। রাতে ওই ডাক্তার সাদেক সাহেবকে যশোর যাবার কথা জানান। তিনি পরেরদিন (৯ তারিখে) ঢাকায় ফিরে ডাক্তার দেখাবেন বলে জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি আর পাননি ! সকালে ছুটে গেলাম বাসার ভেতর। নীচের রুমের মেঝেতে চিত হয়ে ঘুমিয়ে প্রিয় আংকেল! পিনপতন শব্ধ নেই ! পাশে চেয়ারে বসে আছেন বর্তমান জেলা পরিষদের সদস্য হাসান সাদেক। সম্ভবত আমিই প্রথম বাইরে থেকে গিয়েছি। মনের অজান্তে আমার হাতের তালু উনার কপালে দিয়ে যে শীতল অনুভূতি পেয়েছিলাম তা আজও অনুভবে টের পাই! মূর্তের মধ্যে হাজার হাজার আম জনতার কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে উঠল! তাঁর আত্না শান্তিতে থাকুক সেই কামনা করা ছাড়া ঋণ শোধ করার কোন যোগ্যতা যে আমার নেই।

তাঁর সহধর্মী জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক প্রিয় মায়ের মতো। তিনি ৫ জানুয়ারি জীবনের ঝুকি নিয়ে কেশবপুরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সাদেক সাহেবের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে নিরলসভাবে চেষ্টা করছেন। শান্তিতে থাকুক প্রিয় সাদেক সাহেবের আত্না! আর এগিয়ে যান প্রিয় আন্টি। শ্রদ্ধা ও শুভকামনা।

কবির হোসেন
কেশবপুর