‘স্বাধীনতার যুদ্ধক্ষেত্র’



সাজেদ রহমান।। যশোর-চৌগাছা সড়কের সিংহঝুলি বাজারের আগে মশিয়ারনগর মোড়। রাস্তার পাশে পাথরে খোদাই করে লেখা ‘স্বাধীনতার যুদ্ধক্ষেত্র’। দক্ষিণে কিছুদুর গেলেই ঐতিহাসিক রণাঙ্গন জগন্নাথপুর গ্রামের বিরাট মাঠ। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে বয়রা সীমান্ত দিয়ে কপোতাক্ষ নদ পার হয়ে মিত্রবাহিনী জগন্নাথপুরে এসেছিল। এখানে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মিত্রবাহিনী লড়েছিল বিমান, ট্যাংক, কামান ও মেশিনগানের সাহায্যে। এই রণাঙ্গনে মিত্রবাহিনী, হানাদার বাহিনীর তিনটি স্যাবার জেট বিমান ও ১৩টি চীনা স্যাফে ট্যাংক ধ্বংস করে দিয়েছিল। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের গুলি-গোলা ফুরিয়ে গেলে স্কুল মাঠে শুরু হয় হাতাহাতি।
এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাকিস্তানি সেনারা যশোর সেনানিবাসে এসে আশ্রয় নেয়। একপর্যায়ে ৬ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে তারা সেনানিবাস ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওই দিনই যশোর শত্রুমুক্ত হয়। স্বাধীনতার পর জগন্নাথপুরের নামকরণ হয় মুক্তিনগর।
১৯৯৭ সালের আগস্ট মাসে ভারতের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল শঙ্কর রায় চৌধুরী এই রণাঙ্গন পরিদর্শন করেন। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমি এই মাঠে যুদ্ধ করেছি। আর আমাদের স্যার নবম ডিভিশনের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল দলবীর সিং একাত্তরে বয়রা সীমান্ত দিয়ে এসে ঝিকরগাছার পথ ধরে যশোর শহরে পৌঁছেন। আমি এই যুদ্ধের কথা কোনো দিন ভুলব না।’